জামালপুর প্রতিনিধি :
ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে যমুনার পানি বৃদ্ধির কারণে জামালপুরের সাত উপজেলায় এবারের ভয়াবহ বন্যায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে বন্যা কবলিত এলাকার লাখো মানুষ। সেই সঙ্গে বসত-বাড়ি হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছেন বন্যা প্লাবিত এলাবার হাজারো মানুষ। সরকারি হিসাব মতে জেলায় প্রায় ৫৩ হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ অবস্থায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে অগ্রধিকারের ভিত্তিতে ঘর নির্মাণের জন্য টিন ও নগদ অর্থ বরাদ্দ দিবে জানিয়েছে ভুক্তভোগীরা। এবারের বন্যায় জেলার সাত উপজেলায় ৬২টি ইউনিয়নে ১৩ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছিল। যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রাস্তার পাশের উঁচু ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নেয় বানভাসিরা । পানির প্রবল স্রোতে একমাত্র আশ্রয়স্থল বসত ঘরটি বন্যার জলে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। সংসারে থাকার মতো নিজের প্রাণটা ছাড়া আর কিছুই নেই। তাই বন্যার পানি কমে গেলেও অসহায় মানুষগুলো স্বভাবিক হতে পারেনি। পরিবার নিয়ে বসত ভিটেতে ফিরে গেলেও ঘর না থাকায়, বন্যা ক্ষতিগ্রস্ত মানুষেরা চরম দুর্ভোগে পড়েছে।
জেলা প্রশাসনের হিসাব মতে প্রায় ৫৩ হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তার মধ্যে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৭ হাজার ২৫০টি। টাকার অংকে যার ক্ষতির পরিমাণ অনুমানিক প্রায় তিনশ কোটি টাকার বেশি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রাথমিক বরাদ্দ বাবদ ১৭শ বান্ডিল ঢেউটিন ও ৫১ লাখ টাকা বিতরণের কথা জানিয়েছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত এক বানভাসিরা জানান, চোখের সামনে প্রবল পানির তোরে ঘর ভাসিয়ে নিয়ে গেছে,আমরা কোনো রকমে নিজের জীবনটা বাঁচিয়ে স্কুলে আশ্রয় নিয়েছিলাম। বন্যায় ঘরবাড়ি হারিয়ে মানুষের বাড়িতে বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে আছি ,ঘরের সাথে সংসারের সব কিছু বন্যার পানিতে নিয়ে চলে গেছে। আমরা এখন র্সবশান্ত হয়ে দিন যাপন করছি আমাদের কিছুই নাই।
এদিকে ৭ নম্বর পার্থশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইফতেখার আলম বাবুল জানান, আমার ইউনিয়নের একটি গ্রামেই তিনশ ঘর বন্যার পানিতে বিলীন হয়ে গেছে। আর এমনও কিছু লোকের ঘর পানির স্রোতে ভেসে নিয়ে গেছে যেটা আর কোনো দিন ওই লোকটি ঘর নতুন করে বানানোর সক্ষমতা নেই।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, জেলার সাত উপজেলায় প্রায় সব স্থানেই এরকম দৃশ্য। বিশেষ করে পার্থশী, চিনাডুলি, গুডাইল, নোয়ারপাড়া, বেলগাছা সাপদরি, আমতলি, চুকাইবাড়ি, রড়খালসহ বিভিন্ন জায়গায় উল্লেখযোগ্য।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. নায়েব আলী জানান, খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রণয়ন করে বরাদ্দকৃত ত্রাণ অগ্রধিকার ভিত্তিতে বিতরণ করা হবে।
Leave a Reply