রংপুরপ্রতিনিধি:
রংপুরের বদরগঞ্জের রামনাথপুর ইউপির ঘাটাবিল এলাকার খিয়ারপাড়া থেকে গৃহবধূকে অপহরণের পর পৌরশহরের একটি বাড়িতে আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয়েছে।
এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় ওই গৃহবধূকে অপহরণ করা হয়। রোববার কৌশলে ওই গৃহবধূ অপহরণকারীদের কবল থেকে মুক্ত হন। এ ঘটনায় বদরগঞ্জ থানায় মামলা হলে পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে মূল হোতা রেয়াজুল ইসলামকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। ওই গৃহবধূ গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
মামলার সূত্রানুযায়ী, ১২ বছর আগে ওই গৃহবধূর বিয়ে হলেও পরিবারে ছেলে সন্তান না থাকায় তার বাবা জামাইসহ তাকে বাড়িতেই রেখে দেন। এরপর তাদের ঘরে দু’সন্তানেরও জন্ম হয়। এ অবস্থায় তার প্রতি কুদৃষ্টি পড়ে প্রতিবেশী অবেজ উদ্দিনের ছেলে রেয়াজুল ইসলামের। সে প্রায়ই ওই গৃহবধূকে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করত। ওই গৃহবধূ বিষয়টি স্বামীসহ পরিবারের অন্যদের জানালে রেয়াজুল ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং তাকে অপহরণসহ প্রাণনাশের হুমকি দেয়। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় ওই গৃহবধূ বাড়ির উঠানে বের হলে রেয়াজুল তাকে অপহরণ করে ডাক্তারপাড়ায় যায়। সেখানে আনারুল নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে আটকে রেখে ওই গৃহবধূর উপর পাশবিক নির্যাতন চালায় রেয়াজুল। এভাবে তিনদিন চলার পর ওই গৃহবধূ কৌশলে বাড়িতে পালিয়ে আসেন। এ সময় তিনি অসুস্থ থাকায় পরিবারের লোকজন তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। কিন্তু তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। তিনি এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছেন। রোববার ওই গৃহবধূ তার বাবার মাধ্যমে বদরগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। যাতে রেয়াজুলের বিরুদ্ধে অপহরণসহ তাকে ধর্ষণের কথা উল্লেখ রয়েছে। এছাড়া পৌরশহরের ডাক্তারপাড়ার আনারুলের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ আনা হয়েছে। পুলিশ ওইদিনই অভিযোগটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করে মূলহোতা রেয়াজুলকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। বদরগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) আরিফ আলী জানান, গ্রেফতার রেয়াজুলকে আদালতের মাধ্যমে রংপুর জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া আনারুলকে ধরতে পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অপরদিকে রোববার রাতে খিয়ারপাড়ার কয়েকশ’ নারী-পুরুষ রেয়াজুলের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভের পাশাপাশি বদরগঞ্জ থানার ওসি’র সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তারা অবিলম্বে আনারুলকেও গ্রেফতারের জোর দাবি জানান।
Leave a Reply