কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি:
কিশোরগঞ্জে ঘণ্টায় ঘণ্টায় বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। গড়ে প্রতিদিন ৩৫-৫০ জন নতুন রোগী ভর্তি হচ্ছে জেলার বিভিন্ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। এরই মধ্যে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা সাড়ে ৮শ ছাড়িয়ে গেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ভর্তি হয়েছেন আরও ৩৫ জন।
রবিবার পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে নতুন ৩৫ জনসহ সর্বমোট ভর্তি আছেন ১৬৭ জন। অবস্থার অবনতি হওয়ায় এ পর্যন্ত ১১৩ জনকে ঢাকা ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। স্থানান্তরকারীদের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছয় জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আর বাকিরা চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছে।
কিশোরগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ৮৫ জন, বাজিতপুরের জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪১ জনসহ বিভিন্ন উপজেলা হাসপাতালে ১৬৭ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলা সদরের বাইরেও বিভিন্ন উপজেলায় ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গু জ্বর। কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল ও জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বাইরে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে তিনজন, করিমগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে ১১ জন, বাজিতপুরে তিনজন, পাকুন্দিয়ায় দুইজন, কুলিয়ারচরে ছয়জন, নিকলীতে একজন, তাড়াইলে পাঁচজন, ভৈরবে নয়জন এবং ও হোসেনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। আর এরই মধ্যে ডেঙ্গুর ছোবলে কয়েকদিনের ব্যবধানে ঝরে গেছে কিশোরগঞ্জের দুই কলেজছাত্র ও সিআইডি কর্মকর্তাসহ ছয়জনের জীবন।
নাম না প্রকাশ শর্তে বেশ কয়েকজন কিশোরগঞ্জ পৌরবাসী অভিযোগ করে বলেন, শহরগুলোতে সময় মতো মশা নিধনের ওষুধ না দেওয়ায় ও পৌরসভার কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের টানা আন্দোলনে প্রতিটি পৌর শহর জুড়ে দীর্ঘদিন ধরে ময়লা-আর্বজনা না ফেলায় ময়লার স্তূপ থাকার কারণেই মশা ব্যাপক হারে বেড়েছে।
এদিকে হাসপাতালগুলোতে বিনা মূলে ডেঙ্গু শনাক্তকরণ কিট পাওয়া গেলেও রক্তের প্লাটিলেট পরীক্ষা করতে মিলছে না পরীক্ষা যন্ত্র। তাই রক্তের প্লাটিলেট পরীক্ষার জন্য দৌড়াদৌড়ি করতে হচ্ছে বাইরের ক্লিনিক গুলোতে। এতে কিশোরগঞ্জবাসীকে ডেঙ্গু রোগী নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে প্রতি মুহূর্তে।
কিশোরগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডাক্তার মো. হাবিবুর রহমান জানান, আমরা কিশোরগঞ্জে রোগীর সংখ্যা অনুযায়ী ডেঙ্গু শনাক্তকরণ কিট বরাদ্দ পায়নি। যা পেয়েছি ডেঙ্গু শনাক্তকরণ কিট তাতে কিছুটা স্বল্পতা রয়েছে। তবে স্বল্পতা থাকলেও রোগীদের চিকিৎসায় কোনো প্রভাব পড়ছে না। হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসকরা আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছেন।
Leave a Reply