টেকনাফ(কক্সবাজার :
কক্সবাজারের টেকনাফ সমুদ্রসৈকতে যেখানে-সেখানে পড়ে আছে গরুর মৃতদেহ। দুর্গন্ধে নাক চেপে হাঁটছেন পর্যটক ও স্থানীয়রা। সৈকতে এ অবস্থা ও দূষিত পরিবেশ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই।
সরেজমিনে রোববার সকালে টেকনাফে সমুদ্রসৈকতে গিয়ে দেখা যায়, গরুর মৃতদেহ পড়ে আছে জিও ব্যাগ ও ব্লকের মাঝখানে। এর আধা কিলোমিটার দূরে তুলাতলি ও লম্বরী এলাকায় পড়ে আছে আরো দুটি গরুর মৃতদেহ। এখানেই শেষ নয়। সৈকতের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে নারকেলের ছোবড়া, ডাবের খোসা ও বিস্কুট-চানাচুরের প্যাকেট।
একজন গরু ব্যবসায়ী বলেন, এবারে মিয়ানমার থেকে আনার সময় কিছু গরু মারা যায়। তবে গত শনিবার একদিনে একটি ট্রলারে ৩৩টি গরু মারা গেছে। ওইসব গরুগুলো সাগরে ফেলে দিয়েছে ট্রলারের শ্রমিকরা। ওইসব গরুগুলো ভেসে আসছে কূলে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কোরবানি ঈদের আগে মিয়ানমার থেকে নৌপথে পশু আনেন বেপারীরা। নৌকায় মরে যাওয়া পশু সাগরে ফেলে দেন তারা। ওই পশুই সৈকতে ভেসে এসেছে।
ঢাকার একটি বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মনিরুল ইসলাম বলেন, আমি চতুর্থবারের মতো টেকনাফে এলাম। সমুদ্রসৈকত ও পাহাড় ঘেরা টেকনাফ-কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ দিয়ে চললেই কি যে আনন্দ লাগে। তবে সৈকতের এমন হাল দেখে হতবাক হয়েছি। চারদিকে দুর্গন্ধ, কোথাও দাঁড়ানো যাচ্ছে না।
সৈকতপাড়ের লোকজন বলেন, আশপাশে দোকানপাটের আবর্জনা সমুদ্রসৈকতে ফেলা হয়। এ কারণে আবর্জনা মাড়িয়েই সৈকতে ঘুরে বেড়াতে হয় পর্যটকদের। জেলেরা সৈকতেই জাল পরিষ্কার করেন। জালে আটকে থাকা মরা মাছ ফেলা হয় বালুচরে। মাছ পঁচেও দুর্গন্ধ ছড়ায়।
সৈকতের মহেষখালীয়াপাড়া পয়েন্টে কথা হয় জেলে আব্দুর রশিদের সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রায় সময় মাছ ধরে কূলে আসার পর চরে জাল বিছিয়ে আটকাপড়া মাছসহ কাঁকড়া পরিষ্কার করি। কেউ এতে কোনোদিন বাধা দেয়নি। এসব মাছ ফেলে রাখলে কিছু অংশ কুকুরে খায়, বাকিগুলো জোয়ারে ভেসে যায়। তাই কষ্ট করে দূরে ফেলার কোনো কারণ নেই।
এসব মাছ জাল থেকে ছাড়িয়ে সৈকতে ফেলার কারণে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি অবশ্য জেলেরা স্বীকার করেন।
কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি দীপক শর্মা দীপু বলেন, এভাবে পশুর মৃতদেহ পড়ে থাকা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ। এসব মৃতদেহ থেকে রোগ-জীবাণু ছড়াতে পারে। পর্যটকদের স্বার্থে এগুলোকে মাটিতে পুঁতে ফেলা জরুরি।
ইউএনও মো. রবিউল হাসান বলেন, সৈকতে পড়ে থাকা পশুর মৃতদেহগুলো পুঁতে ফেলার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে
Leave a Reply