যুগ-যুগান্তর ডেস্ক :
কাশি
ভাদ্র মাসের তালপাকা গরম কদিন ধরেই। সেই সাথে হুটহাট বৃষ্টি। গরমের এই সময়ে আবওহাওয়া বেশ প্রতিকূলে থাকে মানুষের দেহের জন্য। বিশেষ করে যাদের এলার্জির সমস্যা আছে তারা এ সময়ে বেশ ভোগান্তির মধ্য দিয়ে যান। তবে সবচেয়ে বেশি যে সমস্যাটা মোকাবেলা করতে হয় সেটা হলো কাশি। অনেকেরই এই সময় শুকনো কিংবা সর্দি কাশি হয়ে থাকে। দিন কয়েক পরে সেরেও যায়। তবে কারো কারোটা সহজে সারতেই চায় না। কাশিটা ধীরে ধীরে মারাত্মক রূপ নিতে থাকে। দীর্ঘদিন কাশি থাকলে কী ধরণের সমস্যা হতে পারে চলুন জেনে নেওয়া যাক।
ব্রংকাইটিস :
দীর্ঘদিন ধরে শুকনো কাশিতে ভুগলে অনেক যন্ত্রণা পোহাতে হয়। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে এটি অনেক বেশি কষ্টের। সাধারণ ঠাণ্ডা থেকে শুকনো কাশি হলে সেখান থেকে ব্রংকাইটিস এর মতো অসুখ হতে পারে। এ ধরণের কাশির কিছু লক্ষণ রয়েছে। নাক থেকে সর্দি পড়া, সারাক্ষণ গলায় ব্যথা এবং কোন কিছু ভালমতো গিলতে না পারা। এ ধরণের লক্ষণ প্রকাশ পেলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।
নিউমোনিয়া :
নিউমোনিয়া শুধু ঠাণ্ডা থেকে হয়না। গরমে ঠাণ্ডা লাগলেও নিউমোনিয়া হতে পারে। নিউমোনিয়ার লক্ষণের মধ্যে রয়েছে ভয়ঙ্কর রকম কাশি এবং সেই সাথে কখনো কখনো রক্ত যাওয়া। এর পাশাপাশি অবসন্নতা এবং জ্বরও আসতে পারে শরীরে। নিউমোনিয়া সবচেয়ে বিপদজনক শিশুদের ক্ষেত্রে। এর ফলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাই নিউমোনিয়ার লক্ষণ দেখা দিলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
পোস্ট নাসাল ড্রিপ :
এ ধরণের সমস্যা হয় মূলত নাক থেকে। নাকের বেশ কিছু সমস্যার কারণে শুকনো কাশি হতে পারে। এই কাশি গলাতেও সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে গলায় চুলকানি এবং খুসখুসে অস্বস্তি অনুভূত হওয়া। এই ধরণের রোগের ফলে নাক এবং গলার বেশ ক্ষতি হয়। তাই কাশি দীর্ঘস্থায়ী না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
গ্যাস্ট্রোফাগিয়েল রিফ্লাক্স ডিজিজ :
এই রোগটিকে সংক্ষেপে ডাকা হয় জিইআরডি। এটি শুকনো কাশির একটি বড় কারণ। অনেক মানুষই এই রোগে ভুগেন অথচ সচেতনতার অভাবে এটিকে পেলে পুষে বড় করতে থাকেন। এই রোগে যারা আক্রান্ত হন তারা বুকের এবং পেটের নানা সমস্যাতে ভোগেন খুব বেশি খেয়ে ফেললে এই রোগের আক্রমণ শুরু হয়ে যায়।
অ্যাজমা :
অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্ট পরিচিত একটি রোগ। শুকনো কাশির কারণ অনেক সময় শ্বাসকষ্ট হতে পারে। যারা এই সমস্যায় ভোগেন তাদের ফুসফুস পর্যাপ্ত বাতাস প্রবেশ না করতে পারলে কাশি হয়। এবং সেই কাশির মাত্রা ভয়াবহ। শুধু কাশিতেই থেমে থাকেনা শরীরের অন্যান্য রোগেও শ্বাসকষ্ট বেশ প্রভাব ফেলে থাকে।
ফুসফুসের ক্যান্সার :
সবচেয়ে মারাত্মক কাশির সমস্যা এটিই। অনেক সময় ফুসফুসে ক্যানসার বাসা বাধলে দীর্ঘ সময়ব্যাপী কাশি হতে পারে। তবে দ্রুত সুচিকিৎসা নিলে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। নয়তো এই কাশিই হতে পারে আপনার মৃত্যুর কারণ। তাই কাশি বেশিদিন স্থায়ী হলে চিকিৎসকের দ্বারস্থ হওয়াটা অতি জরুরী।
Leave a Reply