যুগ-যুগান্তর ডেস্ক :
বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদক ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’। ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর শহীদদের স্মরণে ১৯৭৭ সাল থেকে প্রতি বছর বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস ২৬শে মার্চ এই পদক প্রদান করা হয়ে থাকে। এই পুরস্কার জাতীয় জীবনে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত বিভিন্ন ক্ষেত্রে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশের নাগরিক এমন ব্যক্তি বা গোষ্ঠিকে প্রদান করা হয়ে থাকে। তবে এ ব্যাপারে সকলের চেয়ে আলাদা ছিলেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) একাংশের সভাপতি, প্রবীণ রাজনীতিবিদ অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ। ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০১৫’ সবিনয়ে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। এর আগে তিনি দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মন্ত্রিত্ব নিতেও অস্বীকার করেছিলেন। ২০১৫ সালে স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য অধ্যাপক মোজাফফরসহ আটজনের নাম ঘোষণা করে সরকার। সেসময় ন্যাপ সভাপতি এ সম্মাননা নেবেন না, তা আগেই দলের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হলে বাকি সাতজনের হাতে পদক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে অধ্যাপক মোজাফফরের ‘অনাগ্রহের’ কারণে শেষ পর্যন্ত তার নাম তালিকা থেকেও বাদ দেওয়া হয়। এ পর্যন্ত স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্তদের পরিচিতিমূলক গ্রন্থেও তার নাম রাখা হয়নি।
স্বাধীনতা পদক না নেওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেছিলেন, রাজনীতির অর্থ দেশসেবা, মানুষের সেবা। পদ বা পদবীর জন্য কখনও রাজনীতি করিনি। শেখ মুজিব আমাকে অনেক কিছু বানানোর চেষ্টা করেছিলেন, আমি হইনি। আমি মহাত্মা গান্ধী, মাওলানা ভাসানীর অনুসারী। পদক দিলে বা নিলেই সম্মানিত হয়, এ দৃষ্টিভঙ্গিতে আমি বিশ্বাসী নই। দেশপ্রেম ও মানবতাবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে আমি রাজনীতিতে এসেছি, কোনো পদক বা পদবি আমাকে উদ্বুদ্ধ করেনি। সত্যিকার অর্থে যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন, জীবন উৎসর্গ করেছিলেন, তারা কেউই কোনো প্রাপ্তির আশায় করেনি। শুক্রবার ) রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে প্রবীণ এ রাজনীতিবিদের বয়স হয়েছিলো ৯৭ বছর।অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ মুক্তিযুদ্ধকালীন মুজিবনগর সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন। এছাড়া ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতাযুদ্ধে তার ভূমিকা অবিস্মরণীয়। তার জন্ম ১৯২২ সালে। ১৯৩৭ সালে রাজনীতিতে অংশ নেন।
Leave a Reply