নিজস্ব প্রতিবেদক :
নওগাঁর মান্দা উপজেলার আত্রাই নদীর বাঁধ সংলগ্ন ছোট বেলালদহ গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে কাগজের ঠোঙা। জুতার ব্যাগ তৈরি করে দারিদ্রকে জয় করেছে মঞ্জুয়ারা খাতুন। মান্দা উপজেলার কুসুম্বা ইউনিয়নের ছোট বেলালদহ গ্রামের মঞ্জুয়ারা খাতুনের স্বামী সিদ্দিক ও ২ মেয়ে নিয়ে ৪ জনের অভাবী সংসার।
একসময় দুবেলা পেটপুরে ভাত জুটত না। অভাবের সংসারে দিশাহারা মঞ্জুয়ারা একটি কাজের জন্য এদিক ওদিক ছুটতেন সারাক্ষণ। তার দুঃখ-দুর্দশার কথা শুনে তাকে কাগজের ঠোঙ্গা, মিষ্টির কার্টন, শপিং ব্যাগ তৈরির প্রদান করান।
মঞ্জুয়ারা জানায়, গত ২ বছর পূর্বে তিনি এ কাজ শুরু করেন। এরপর তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
বর্তমানে তিনি ও তার মেয়ে জীবন জীবিকার তাগিদে চুক্তির মাধ্যমে শতকরা ২৫ টাকায় ঠোঙা তৈরি করে এবং তার স্বামী দিন মজুরের কাজ করেন। মহাজনের কাছ থেকে নেয়া প্রয়োজনীয় উপকরণ আঠা, কাগজ, স্ট্যাপলার পিন দিয়ে ঠোঙা তৈরি করে থাকেন। স্থানীয় মহাজন প্রকাশ তৈরি কৃত ঠোঙা সংগ্রহ করে উপজেলার বিভিন্ন কনফেকশনারি, হোটেল-রেস্তোরাঁয় ও মার্কেটের দোকানগুলোতে সরবরাহ করেন। টিনের চালা বেড়ার ঘরে বসবাস করেন তিনি। ঠোঙা তৈরি করে তার যা মাসিক আয় হয় তা দিয়ে চলে সংসার।
তার তৈরি ঠোঙা, কার্টন, জুতার ব্যাগের চাহিদা বেড়ে গেছে। তার মেয়েরা লেখাপড়া শেষে অবসর সময়ে মাকে ঠোঙা, কার্টুন, শপিং ব্যাগ তৈরি করতে সাহায্য করেন। ঠোঙা, কার্টন, জুতার ঠোঙা তৈরি করে মেয়েদের লেখাপড়া এবং সংসারের খরচ চালান।
বড় মেয়ে নাসরিন এবারে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। ছোট মেয়ে নাজনীন তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। কাগজের ঠোঙা তৈরি কারিগর মঞ্জুয়ারা খাতুন বলেন, ঠোঙা, কার্টন, জুতার ব্যাগ তৈরি করে তার সংসার বেশ ভালোই চলছে।
মঞ্জুয়ারা খাতুনের স্বামী সিদ্দিক জানান, আমাদের সংসারে এখন সুখ-শান্তি, হাসি-আনান্দ ফিরে এসেছে। এখন আর দুবেলা না খেয়ে থাকতে হয় না।
এ ব্যাপারে মান্দা উপজেলার কুসুম্বা ইউপি চেয়ারম্যান নওফেল আলী জানান, সিদ্দিক ও মঞ্জুয়ারা খাতুন তারা দুজনে এক সময় খুব কষ্ট করেছে। তারা এখন কাগজের ঠোঙা, কার্টন, তৈরি করে তাদের সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরে এসেছে। তাদের মেয়েদেরও এখন স্কুলে পাঠায়। তিনি মঞ্জুয়ারার মতো অন্যদেরও প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজ করার আহবান।
Leave a Reply