আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইরানের সঙ্গে চলমান উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষিতে মধ্যপ্রাচ্যে অতিরিক্ত আরো ১০০০ সেনা পাঠাচ্ছে মার্কিন সামরিক বাহিনী। এ প্রসঙ্গে মার্কিন ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্যাট্রিক শানাহান বলেন, ইরানি সেনাবাহিনীর শত্রুতাপূর্ণ আচরণের জবাবেই অতিরিক্ত সেনা মোতায়েনের এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। – খবর বিবিসি
এই ঘোষণার কিছুক্ষণ আগে পেন্টাগন কিছু নতুন ছবি প্রকাশ করে। ছবিতে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার হামলার শিকার তেল ট্যাঙ্কার দুটির একটি থেকে অবিস্ফোরিত একটি লিমপেট মাইন সরিয়ে নিচ্ছে ইরানি একটি ছোট নৌকার ক্রু সদস্যরা।
প্রকাশকৃত ছবিগুলো ওমান উপসাগরে ট্যাংকার হামলার সঙ্গে ইরানের জড়িত থাকার বিষয়টি তুলে ধরেছে বলে দাবি করেছে তারা।
গেল ১৩ জুন ওমান উপসাগরে দুটি তেলের ট্যাঙ্কারে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ওই হামলার জন্য ইরানকেই দায়ী করেছে যুক্তরাষ্ট্র। অপরদিকে, মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম মিত্র দেশ সৌদিও এই হামলার জন্য ইরানের ওপরই দায় চাপিয়েছে।
তবে গেল মে মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে জাহাজে চারটি লিমপেট মাইন হামলার ঘটনার মতোই শুরু থেকেই এ ঘটনার সঙ্গেও কোনো ধরনের সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছে ইরান।
এক বিবৃতিতে শানাহান বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সঙ্গে সংঘাত চায় না। কিন্তু ওই অঞ্চলে আমাদের জাতীয় স্বার্থ রক্ষার জন্য কর্মরত সামরিক সদস্যদের নিরাপত্তা ও কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।”
“ইরানি বাহিনীর শত্রুতামূলক আচরণের বিষয়ে এবং তাদের অনুগত গোষ্ঠীগুলো যারা ওই অঞ্চলজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ও স্বার্থকে হুমকি দিচ্ছে, তাদের বিষয়ে আমরা যেসব নির্ভরযোগ্য, বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা তথ্য পেয়েছি ইরানের সাম্প্রতিক হামলাগুলো তা প্রমাণ করেছে।”
মার্কিন সামরিক বাহিনী ধারাবাহিকভাবে পরিস্থিতির ওপর নজর রাখবে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী সংখ্যা সমন্বয় করবে বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের অতিরিক্ত এই কোথায় মোতায়েন করা হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি।
গেল মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্যে অতিরিক্ত দেড় হাজার মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। এবার ওই অঞ্চলে অতিরিক্ত আরো এক হাজার মার্কিন মোতায়েনের ঘোষণা এলো।
রোববার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ চায় না, তবু ‘যতগুলো বিকল্প আছে তার সবই বিবেচনা করছে (যুক্তরাষ্ট্র)।
মঙ্গলবার ফ্লোরিডায় মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ডে মধ্যপ্রাচ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত সামরিক কমান্ডারের সঙ্গে পম্পেওর বৈঠক করার কথা রয়েছে।
সোমবার ইরান ঘোষণা করেছে, তারা ২০১৫ সালে ছয় বিশ্ব শক্তির সঙ্গে তাদের স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তি আর মেনে চলবে না, ২৭ জুনের মধ্যে তাদের সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুদ ওই চুক্তিতে বেঁধে দেয়া সীমা পেরিয়ে যাবে।
বৃহস্পতিবার হরমুজ প্রণালীর দক্ষিণে ওমান উপসাগরে দুটি তেলবাহী ট্যাংকারের ওপর হামলা হয়। এসব হামলার জন্য ইরানকে দায়ী করেছে যুক্তরাষ্ট্র কিন্তু এর সঙ্গে তারা কোনোভাবে জড়িত নয় বলে দাবি করেছে ইরান।
Leave a Reply