যুগ-যুগান্তর ডেস্ক :
ছবি: সংগৃহীত
পৃথিবী জুড়ে ১৯৫ টি দেশ রয়েছে। প্রতিটি দেশের ভাষা থেকে শুরু করে সংস্কৃতি কিংবা,আইন কানুন সবকিছুই ভিন্ন। এমন অনেক দেশ রয়েছে যেখানকার আইন কানুন যেকোনো সাধারণ মানুষকে অবাক করতে বাধ্য করবে। এমনই এক দেশ উত্তর কোরিয়া। এটি পৃথিবীর সবথেকে গুপ্ত দেশও বটে। ১৯৫৩ সালে দুই কোরিয়ার যুদ্ধ শেষে বিভক্ত হয়ে দু’টি ভিন্ন রাষ্ট্রে পরিণত হয়। ৩৮ প্যারালাল রেখা দ্বারা বিভক্ত এই দুই দেশের উত্তর অংশে শুরু হয় কমিউনিস্ট শাসন এবং দক্ষিণ অংশ বেছে নেয় গণতন্ত্র। এরপর থেকেই উত্তর কোরিয়ার অভ্যন্তরীণ অবস্থা সম্পর্কে পুরো পৃথিবীর অজানা।
এমনকি উত্তর কোরিয়ার মানুষরাও বাইরের পৃথিবী সম্পর্কে ধারণা রাখে না। উত্তর কোরিয়ার মানুষ বাইরেই পৃথিবী সম্পর্কে এতটাই অজ্ঞ যে উত্তর কোরিয়ার বেশিরভাগ মানুষই মানুষের চাঁদে পা রাখাকে একটি কৌতুক মনে করে। এমনকি উত্তর কোরিয়াতে এমন সব অদ্ভুত নিয়ম কানুন রয়েছে যা আপনার চোখ কপালে তুলতে বাধ্য করবে। তাহলে জেনে নেয়া যাক অজানা দেশ উত্তর কোরিয়া সম্পর্কে।
১. উত্তর কোরিয়া একটি নেক্রোক্রেসি অর্থ্যাৎ এমন রাষ্ট্র যা মৃত ব্যাক্তি দ্বারা পরিচালিত হয়। ১৯৫৩ সালে উত্তর কোরিয়া বিভক্ত হওয়ার পর তখনকার উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম ইল সাং নিজেকে সব সময়ের জন্য উত্তর কোরিয়ার প্রসিডেন্ট দাবি করে সংবিধান তৈরি করে। যা তার মৃত্যুর পরেও অপরিবর্তিত। এমনকি উত্তর কোরিয়াতে সময় ও হিসাব করা হয় কিন ইল সাং এর জন্ম তারিখ থেকে। সে হিসাবে উত্তর কোরিয়ায় বর্তমানে ১০৭ সাল চলে।
২. দেশটিতে সরকারিভাবে হেয়ারস্টাইল ঠিক করে দেয়া হয়। নারী এবং পুরুষ সকলের জন্য সর্বোমোট ১৫ টি হেয়ারস্টাইল রয়েছে। এর বাইরে কিংবা উত্তর কোরিয়ার সুপ্রিম লিডার কিম জং উম এর মত করে চুল কাটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
৩. উত্তর কোরিয়াতে সর্বমোট ৩ টি টিভি চ্যানেল রয়েছে। যার মধ্যে দুইটি শুধুমাত্র ছুটির দিনগুলোতে প্রচারিত হয় এবং অপরটি প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে চালু হয়।
৪. সেখানকার স্কুল এবং কলেজে নেতা কিম ইল সংকে দেবতা হিসেবে পড়ানো হয় এবং বর্তমান নেতা কিম জং উনকে বলা হয়ে থাকে দেবশিশু।
৫. সে দেশের মাত্র ১ ভাগ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারে। বাকি ৯৯ ভাগের জন্য ইন্টারনেট নিষিদ্ধ।
৭. উত্তর কোরিয়াতে প্রতি ৫ বছরেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তবে এই নির্বাচনের ব্যালেট পেপারে শুধুমাত্র একটি দলেরই নাম থাকে।
৮. উত্তর কোরিয়া পৃথিবীর একমাত্র দেশ যেখানে মারিজুয়ানা চাষ এবং প্রকাশ্যে সেবন সবই আইনসংগত।
৯. উত্তর কোরিয়ার কোনো নাগরিকের বাইরের কোনো দেশে যাওয়া আইনত অপরাধ। এমনকি অনেক নাগরিক সে থেকে পালানোর চেষ্টা করায় মৃত্যুদন্ডেও দন্ডিত হয়েছে।
১০. উত্তর কোরিয়াতে কেউ অপরাধ করলে সেই অপরাধের শাস্তি ওই ব্যাক্তির ৩ প্রজন্ম পর্যন্ত ভোগ করতে হয়।
১১. উত্তর কোরিয়াতে পৃথিবীর সবথেকে বড় স্টেডিয়াম রয়েছে। যার নাম রুগ্নাডো মে ডে এবং ধারণ ক্ষমতা দেড় লাখ। ১৯৯৫ সালে এই স্টেডিয়ামেই পৃথিবীর সবথেকে বড় রেসলিং ম্যাচ সংগঠিত হয়।
১২. উত্তর কোরিয়ার প্রতিটি শিক্ষার্থীকে স্কুলের চেয়ার টেবিল, বেঞ্চ এবং এসি সবকিছুর জন্যই অর্থ প্রদান করতে হয়। সরকারি হিসাব অনুযায়ী উত্তর কোরিয়ার ৯৯ শতাংশ মানুষই শিক্ষিত।
১৩. ৮ জুলাই এবং ১৭ ই ডিসেম্বর যথাক্রমে উত্তর কোরিয়ার দুই নেতা কিম ইল সাং এবং কিম জং ইল এর মৃত্যুবার্ষিকী। এই দুই দিন পুরো উত্তর কোরিয়াতে কোনো প্রকার অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ। এমনকি এই দুই দিন কোনো জন্মদিন বা বিবাহবার্ষিকী পালনও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
১৪. উত্তর কোরিয়ার রয়েছে নিজস্ব হ্যাকার বাহিনী। যারা ইউনিট ৯২ নামে পরিচিত। উত্তর কোরিয়ার নিউক্লিয়ার প্রোগ্রাম এবং অন্যান্য খরচ সচল রাখতে এই বাহিনী ব্যাংক চুরি থেকে শুরু বড় বড় মানি স্কিম করে থাকে। ধারণা করা হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির জন্য এই ইউনিটই দায়ী!
Leave a Reply